নবীজির চাচাগণ

আব্দুল মুত্তালিবের সন্তানগণ হলেন নবীজির চাচা। সর্বসম্মত মতে, সংখ্যায় তারা নয় জন— ১. হামযা, ২. আব্বাস রা., ৩. আবু তালিব; যার প্রকৃত নাম আবদে মানাফ, ৪. আবু লাহাব; যার প্রকৃত নাম আব্দুল উযযা, ৫. যুবায়ের, ৬. যিরার, ৭. মুকাওয়িম, ৮. মুগিরা ৯. গিদাক; যার প্রকৃত নাম মুসআব। নবীজির পিতা আব্দুল্লাহ হলেন আব্দুল মুত্তালিবের দশম সন্তান।

অনেকে বলেন, হারেস নামেও তার এক চাচা ছিলেন। আব্দুল কাবা নামে আরেকজন ছিল; কারও মতে, এটা মুকাওয়িম-এর অপর নাম। কেউ বলেছেন, জাহল নামক আরেকজন ছিল; অন্যরা বলেছেন, এটা মুগিরার অপর নাম। কেউ বলেছেন, কসাম নামেও একজন ছিল।

এদের মধ্যে হামযা ও আব্বাস রা. ছাড়া কেউ ইসলাম গ্রহণ করেন নি।

হামযা : তিনি ছিলেন আল্লাহ ও তার নবীজির স. সিংহ ও সাইয়িদুশ শুহাদা (শহিদদের সর্দার)। তিনি নবুয়তের ষষ্ঠ বছরে মুসলমান হন, ওমর রা.-এর ইসলাম গ্রহণের ঠিক তিনদিন আগে। তিনি মদিনায় হিজরত করেছেন, অংশগ্রহণ করেছেন বদর যুদ্ধে। এরপর উহুদ যুদ্ধেও অংশ নেন এবং শাহাদাত বরণ করেন। শাহাদাতের পর তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকৃত করা হয়েছিল। তাকে এবং তার বোনের ছেলে আব্দুল্লাহ ইবনে জাহাশ রা.-কে একই কবরে দাফন করা হয়। [1.(মিন মায়ীনিস সীরাত’, পৃষ্ঠা ৬৬)]

আব্বাস : ইসলাম গ্রহণ করেন অনেক দেরিতে। কিন্তু তার অবস্থান ছিল সবসময় নবীজির স. পাশে। আকাবার দিন যখন নবীজি আনসারদের বাইয়াত করেন, তখন তিনি উপস্থিত থেকে তাদের সাথে সংলাপ করেন। বদর যুদ্ধের দিন তাকে বাধ্য হয়ে উপস্থিত থাকতে হয়, মুসলিমদের হাতে বন্দি হতে হয়। পরে মুক্তিপণ দিয়ে মক্কায় ফিরে যান। মক্কা বিজয়ের পূর্বে তিনি ইসলামের ঘোষণা দেন এবং হিজরতের উদ্দেশ্যে মদিনায় রওয়ানা হন। পথিমধ্যে ‘জুহফা’ নামক স্থানে নবীজির স. সাথে সাক্ষাৎ হয়। ফলে তিনি পরিবারকে মদিনায় পাঠিয়ে দিয়ে মক্কা বিজয়ে শরিক হওয়ার জন্য নবীজির সাথে ফেরত আসেন। ওসমান রা.-এর শাহাদাতের দুই বছর পূর্বে তিনি মদিনায় ইন্তেকাল করেন।