নবীজির পুত্রসন্তানগণ

মনযূরুল হক

নবীজির তিন পুত্র

ইবনে কাসির রহ. বলেন— এ-বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই যে, শুধু ইবরাহিম রা. ছাড়া নবীজির স. সব সন্তান খাদিজা রা.-এর গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছে। ইবরাহিমের রা. হয়েছে জন্ম মারিয়া বিনতে শামউন কিবতিয়াহ রা.-এর গর্ভ থেকে। [1.(যাদুল মায়াদ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৮১)]

ইবনুল কাইয়িমের রহ. মতে— নবীজির প্রথম সন্তান হলেন কাসিম। তারপর পর্যায়ক্রমে যাইনাব, রুকাইয়াহ, উম্মে কুলসুম, ফাতিমা। এরপর জন্ম নিয়েছেন আবদুল্লা; অবশ্য তার জন্মকাল নিয়ে মতবিরোধ আছে। এরপর ইবরাহিম রা., তিনি মদিনায় জন্ম গ্রহণ করেন। [2.(আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৩০৬-৭)]

সুতরাং নবীজির তিনজন পুত্রসন্তান ছিলেন।

কাসিম : তিনি নবীজির প্রথম সন্তান। নবুয়তের পূর্বে তার জন্ম হয়েছে। তার কারণে নবীজিকে আবুল কাসিম (কাসিমের পিতা) বলা হতো। তিনি কতদিন বেঁচে ছিলেন, তা নিয়ে মতপার্থক্য আছে; অনেকে বলেন— ১৭ মাস। নবীজি সা.-এর সন্তানদের মধ্যে তিনিই প্রথম মারা যান।

আব্দুল্লাহ : বলা হয়— তিনি মক্কায় বাল্যকালেই মারা গেছেন। তবে তার জন্ম কি নবুয়তের পরে না পূর্বে—এ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কয়েকজন নবুয়তের পরে হওয়ার মতকে সহীহ বলেছেন। তার উপাধি ছিলো তাইয়িব ও তাহির (উত্তম ও পবিত্র)। তবে কারও মতে তাইয়িব ও তাহির হলো শেষ দুই সন্তানের উপাধি। ইবনুল কাইয়িম রহ. বলেছেন— না, দুটিই আবদুল্লাহ রা.-এর উপাধি। [3.(যাদুল মায়াদ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১০৩)]

ইবরাহিম : ইবরাহিম রা. জন্ম গ্রহণ করেন অষ্টম হিজরির যিলহজ মাসে। তার মাতা হলেন মারিয়া কিবতিয়া রা.। নবীজি তাকে উম্মে সাইফের কাছে পালতে দিয়েছিলেন; যিনি আবু সাইফ নামক এক কামারের স্ত্রী। [4.(মুসলিম, হাদিস ২৩১৫)]  নবীজি প্রায়ই মদিনার উঁচু ভূমিতে যেতেন ইবরাহিমকে দেখতে, যেখানে ইবরাহিমের দুধ মায়ের বাড়ি। তাকে চুমু দিতেন এবং তার ঘ্রাণ নিতেন। [5.(বুখারি, হাদিস ১৩০৩)]  দুধপানের বয়সেই তিনি মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুর সময় নবীজি কেঁদেছেন। [6.(বুখারি, হাদিস ১৩০৩)]  তার মৃত্যুর দিন সূর্যে গ্রহণ লেগেছিলো। লোকজন বলাবলি করছিল, ইবরাহিমের মৃত্যুতে সূর্যগ্রহণ হয়েছে। নবীজি বললেন—চন্দ্রে বা সূর্যে কারো মৃত্যুর কারণে গ্রহণ লাগে না। কারো বেঁচে থাকার কারণেও না। তোমরা গ্রহণ দেখলে নামাজ পড়, আর দোয়া করো। [7.(মুসলিম, হাদিস ৯১৫)]