পরিবার ২

নবীজির স. গঠন-প্রকৃতি বিষয়ে বর্ণনাকারীর সংখ্যা খুব বেশি নয়, অন্তত হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবিদের সংখ্যা বিবেচনা করলে সংখ্যা একটু বেশিই অপ্রতুল বলে মনে হয়। এর প্রধান কারণ হলো, সাহাবিগণ শরিয়তের বিধিবিধান সম্পর্কিত নবীজির কথা ও কাজের বর্ণনা করায় গুরুত্ব দিয়েছেন বেশি, যতটা মনোযোগ তাঁর গঠন বর্ণনায় ছিল না—যেহেতু নবীজি স. খোদ তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এবং দিনে-রাতে প্রয়োজন হলেই তাকে দেখতে পেতেন তারা।অতএব, মুখ্য বিষয় হিসেবে তার গঠন-প্রকৃতি বর্ণনা খুব একটা পাওয়া যায় না; যা পাওয়া যায়, তা হলো, অন্য হাদিসের মধ্যে গঠনবিষয়ক প্রাসঙ্গিক বর্ণনামাত্র। সবদিক বিবেচনা করলে সম্ভবত নবীজির গঠন বিষয়ক একটি ‘পূর্ণাঙ্গ’ সহিহ হাদিস একজন সাহাবি থেকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

প্রখ্যাত সিরাত গবেষক সালেহ আহমদ শামি এর জন্যে অবশ্য সাহাবিদের শ্রদ্ধাভীতিকেও দায়ি করেছেন। তিনি বলেন : “সাহাবিদের অš—রে নবীজির স. প্রতি শ্রদ্ধাভীতি এত বেশি ছিল যে, তারা তাঁর দিকে ভালোভাবে তাকাতে পারতেন না। তিনি তার বক্তব্যেও সমর্থনে আমর ইবনুল আস রা.-এর একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন, ‘আমার কাছে রসুলের স. চেয়ে প্রিয় কোনও মানুষ ছিল না বটে এবং আমার চোখে তার চেয়ে মযার্দাবানও কেউ নেই। কিন্তু আমি কখনও পূর্ণদৃষ্টিতে তাকে চেয়ে দেখি নি। সুতরাং কেউ যদি তার বিবরণ জানতে চায়, আমি বলতে পারব না।’1  প্রত্যেক সাহাবীর অবস্থাই ছিলো এমন।”2

শামায়েল গ্রন্থকারগণ আরও মনে করেন, মানুষের গঠন-সৌষ্ঠব বর্ণনা করাও যথেষ্ট কঠিন বিষয়। খুব কম মানুষই মানুষের গঠন-প্রকৃতি এককথায় বর্ণনা করার মতো যথাশব্দ ব্যবহারের যোগ্যতা রাখে। যেমন : যদিও মানুষের দেহের দৈর্ঘ্য বিবরণের জন্য লম্বা, মাঝারি ও খাটো—এমন তিন তিনটি শব্দের ব্যবহার রয়েছে। কিন্তু লম্বাও অনেক ধরনের হয় এবং মাঝারি ও খাটোরও রমকফের আছে।